তরমুজ চাষে উপকূলীয় কৃষি অর্থনীতি চাঙ্গা
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ফসল উৎপাদনের বড় বাঁধা লবণাক্ততা। খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততার পরিমাণ প্রতিবছর বাড়ছে। খুলনার কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, বটিয়াঘাটায় আমনই ছিল একমাত্র ফসল, মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করে সেচের মাধ্যমে অল্প বিস্তর কিছু বোরো আবাদ হলেও উৎপাদন খরচ তুলতে কৃষক দিশেহারা হতো। সেখানে বিগত কয়েক বছর কৃষকের ভাগ্যের দুয়ার খুলে দিয়েছে তরমুজ চাষ। উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ বেশী হওয়ায় এসব উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষকের মুখে আজ হাসি ফুটেছে।
খুলনার চার উপজেলায় এবছর তরমুজ বাণিজ্য প্রায় দুই হাজার কোটিতে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে কৃষকের প্রায় ৫০০ কোটি টাকা লাভের সম্ভবনা রয়েছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, খুলনার চার উপজেলায় এবছর ১২ হাজার ১৭৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দাকোপে ৫৭০০ হেক্টর, কয়রায় ২৯৩০ হেক্টর, বটিয়াঘাটা ২১০০ ও পাইকগাছায় ১৪৪৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করেছে চাষিরা। বটিয়াঘাটা উপজেলায গত বছরের তুলনায় এবার ফসলটির চাষ কমলেও অন্য তিন উপজেলায় তরমুজ চাষ এবছর বেড়েছে।
খুলনায় এবছর পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ মে.টন তরমুজ উৎপাদন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে এবং বাজারে দামও ভালো। পাকিজা, সুইট ড্রাগন, মারভেলন, আনারকলি জাতের তরমুজের আবাদ বেশী হয়েছে। বিঘাপ্রতি (৩৩ শতাংশে) খরচ হয়েছে ১৮ থেকে ২২ হাজার টাকা আর বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এসে এসব তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
পাইকার সূত্রে জানা যায়, উপকূলীয় অঞ্চলে চাষকৃত এ তরমুজ সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদাও বেশী। বর্তমানে খুচরা বাজারে এসব তরমুজ ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, উপকূলের কৃষি অর্থনীতিতে তরমুজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। চলতি মৌসুমে তরমুজের ব্যাপক আবাদ বেড়েছে। এবার অনেক এক ফসলী বিলে প্রথমবারের মতো তরমুজের আবাদ হয়েছে। চাষিদের সেচের সুবিধার্থে মিনি পুকুর ও খাল খননের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সংবাদদাতা: মোঃ আবদুর রহমান, এআইসিও,কৃতসা,খুলনা।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS